এম.এ আজিজ রাসেল ::
কক্সবাজার জেলায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস। এ উপলক্ষে ১৭ মার্চ শনিবার সকালে জেলা প্রশাসকের চত্বর থেকে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেনের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তসহ পদস্থ কর্তারা ব্যানার, ফেস্টুন, বাদ্য বাজনা নিয়ে অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি প্রধান প্রধান সড়ক পদক্ষিণ করে পাবলিক লাইব্রেরীর শহীদ দৌলত ময়দানে এসে শেষ হয়। সেখানে জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনি নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কেক কেটে বঙ্গবন্ধুর জন্ম বার্ষিকীর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাইমুম সরওয়ার কামাল এমপি। উদ্বোধক ছিলেন আলহাজ্ব খোরশেদ আরা হক এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার ড.একেএম ইকবাল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তফা, জেলা জাসদের সভাপতি নঈমুল হক চৌধুরী টুটুল ও সিভিল সার্জন ডাঃ আবদুস সালাম। পরে সন্ধ্যায় কক্সবাজার সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পুরস্কার বিতরণ ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ৮ উপজেলার প্রশাসন, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, সরকারি-বেসরকারি সংগঠন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস পালন করে। অপরদিকে বিকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯ তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরীর শহীদ দৌলত ময়দানে বিকেলে আলোচনা সভার আয়োজন করে কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগ। আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক উজ্জল কর। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. সিরাজুল মোস্তফা। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আহমেদ সিআইপি। আলোচনা সভা শেষে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পরে শিশুদের নিয়ে অতিথিরা কেক কেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯ তম জন্মদিন উদযাপন করেন।
কক্সবাজার শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দঃ
“বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন: রঙ ছড়ানো আলো, লাল-সবুজের বাংলাদেশে থাকবে শিশু ভালো”- প্রতিপাদ্যের আলোকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়াধীন সমাজসেবা অধিদফতর পরিচালিত কক্সবাজার শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যে দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৮ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদ্যাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদফতর ও স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত কর্মসূচি যথাযথভাবে পালন করা হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৬ মার্চ “বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ” বিষয়ে সকাল ১০টা হতে ১১টা পর্যন্ত রচনা প্রতিযোগিতা, দুপুর ১২টায় বালক ও বালিকা শাখায় পৃথকভাবে কোরআনখানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করে কেন্দ্রের নিবাসী শিশুরা। শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে কেন্দ্রের নিবাসী শিশুরা “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” শিরোনামে দেয়ালিকা লিখনের কাজ শুরু করে। কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তত্ত্বাবধানে দেয়ালিকা লিখনে প্রতিটি শিশু চিরকুটে এক লাইন করে লিখে কেন্দ্রের উপপ্রকল্প পরিচালক জেসমিন আকতারকে জমা দেন। উপপ্রকল্প পরিচালক চিরকুটের লেখা সংশোধন পূর্বক চূড়ান্ত করেন। তারপর নিবাসী শিশুরা চূড়ান্ত দেয়ালিকা প্রস্তুত করে। একসময়কার ঝুঁকিতে থাকা চর এলাকায় বসবাসরত পিতৃহীন ছিন্নমূল শিশু ফাতেমা তার কচি হাতে লিখেছে- বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশকে নেব এগিয়ে; সোনার বাংলা গড়ব মোরা সোনার শিশু হয়ে। ১৭ মার্চ শনিবার সকালে শিশুরা রঙ-বেরঙের বেলুন, জরি ও নানা উপকরণ দিয়ে ভবন সজ্জ্বিত করে। সকাল ৯.৩০টায় উপপ্রকল্প পরিচালক জেসমিন আকতার এর নেতৃত্বে মুখরিত স্লোগানে নিবাসী শিশুদের নিয়ে পদযাত্রা করে নিকটবর্তী শহরের প্রধান প্রধান সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করা হয়। পদযাত্রা শেষে দিবসের সফলতা কামনা করে ৯৮টি বেলুন উড্ডয়ন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ রইস উদ্দিন মুকুল। কেন্দ্রের এডুকেটর শাহ আলম এর সঞ্চালনায় উপপ্রকল্প পরিচালক জেসমিন আকতার এর সভাপতিত্বে আয়োজিত কেক কাটা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মোঃ ইকবাল। কেন্দ্র মিলনায়তনে উৎসব মুখর পরিবেশে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ সকাল ১০.৩০টায় ১৫ পাউন্ডের কেক কেটে নিবাসী শিশুদের খাওয়ান। সকাল ১১ টায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিশেষ অতিথি মাওলানা মোঃ ইকবাল।
পাঠকের মতামত: